আতিক ফারুক

লেখক

আমার জন্মদিনে মায়ের ব্রেণ টিউমার

আমার জন্মদিনে মায়ের ব্রেণ টিউমার

গদ্য | ৩ ডিসেম্বর ২০২২

আজ আমার জন্মদিন—আট-ই অক্টোবরের এমন দিনে ঢাকা শহরের পরিস্থিতি আজকের মতো ছিল না। আটাশি সালের পর আটানব্বইয়ের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ছিল ঢাকার মানুষজন। বিশেষত আমাদের বা ঢাকার পার্শ্বস্থ গ্রামের মানুষেরা খুব ভোগান্তিতে ছিল সেসময়ের বন্যায়। মা বলতো—

‘তোর জন্মের সময় কত কষ্ট করলাম আমরা—ঘরের ভেতর হাঁটু পানি, উঠোনের পানিতে মাছ, সাপ, কচুরিপানা ভাইসা যাইতাছে, সব দেখতেছিলাম আমরা। তোরে নিয়া সেই বন্যায় কত কষ্ট’।

সেই মা আজ পঁচিশ বছর পর, একই দিনে ব্রেণ টিউমারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে। এরচে যন্ত্রণাদায়ক আজকের দিনে আরকিছু নেই।

২.

আমাদের বিশ্বাস—মা সুস্থ হয়ে আবার আগের মতো বাড়িতে ফিরে আসবে। পেঁপে গাছগুলোর যত্ন নিবে আগের মতো। মায়ের হাতে লাগানো পেঁপে গাছে এতো মিষ্টি পেঁপে আমি কোনোদিন খাইনি—আমার পছন্দের ফল হলেও মায়ের গাছের ফল খেয়ে মনে হয়েছিল এ যেন মায়ের বেহেশতি হাত। যে হাতে সবকিছুই সুন্দর হয়ে ওঠে৷

মায়ের খুব মন খারাপ। হাসপাতালে গেলেই মা কাঁদেন আর বলেন, আমি মরে গেলে বইনডারে একটু দেইখো বাবা—মায়ের মুখে এমন কথা শুনে আমার খুব অস্বস্তি লাগে। আমাদের মা আরও বহুদিন বাঁচবেন বলে তার কত স্বপ্ন আমরা যত্ন করে রেখে দিয়েছি আমাদের ভাবনায়। আরও কত কত স্বপ্নের ভেতর আমরা বেঁচে থাকব মায়ের পাশে।

৩.

বারোটা বাজার সাথে সাথেই মেহেরুনের শুভেচ্ছা বার্তা ‘হ্যাপি বার্থডে মোহন কুমার’। তারপর পাঠাল আমাদের প্রিয় ম্যাম। আকলিমা আপা কল করে শুভেচ্ছা জানালো, বন্ধু মাহশী জানালো ম্যাসেজে। এতো এতো বন্ধুদের ভিড়ে এ চারজন একমাত্র মানুষ, যারা রাত জেগেছিল শুধু আমাকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। নতুনভাবে ভাবতে শিখি আমি—কেউ তো আছে, যে প্রতিদিন আমাকে মনে রাখে। যার ভাবনায় কেবল আমিই একমাত্র গাঙচিল।

৪.

খুব ভেবেছিলাম—এ জন্মদিনে ছোটোখাটো একটা আয়োজন করব। কিন্তু মায়ের অসুস্থতা, তার কান্নার শব্দ আমাদের সবকিছু ম্লান করে দেয়।

এতোগুলো বছর পেরিয়ে গেল, তবু তেমন কোনো ঘটনাই ঘটল না জন্মদিনে। শুধু প্রতিবছর টুকরো কয়েকটা কথা জমিয়ে রেখেছিলাম ডায়েরির পাতায়।

৮. ১০. ১৭

বয়স বাড়ছে। জীবনের খাতায় কত অভিযোগ, অনুযোগ যুক্ত হচ্ছে। জানি না সামনের দিনে কী আছে। তবু নিজেকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

৮. ১০. ১৮

আমার জন্মদিন এমনই, নিরানন্দ হতাশার। কোনো উৎসব নেই। চিরকাল নিঃসঙ্গতা, একাকিত্ব।

৮. ১০. ১৯

আজ আমার জন্মদিন। যারা আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন— সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা।

৮. ১০. ২০

আমার জন্মদিনে শুভেচ্ছা না জানিয়ে ভীষণ পীড়িত করা হলো আমাকে। তোমার শরীরের ভাঁজে ভাঁজে তুমুল রহস্য—আমার কেবল আর্ত চিৎকারে প্রবিষ্ট মোহজাল। তেইশতম জন্মদিনে এসেও আমি নিঃসঙ্গ—কল্পিত ললনার পায়ের শব্দে ভেঙে গেল ঘুম; উড়ে গেল আমার মতোই নিঃসঙ্গ তিতির।

৮. ১০. ২১

আজ আমার জন্মদিনে

তুমি নেই

নিরুত্তর শূন্য পথে

তাই একা একা হেঁটে যাই

নিজেকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

৫.

প্রতিবছর নিজেই নিজেকে শুভেচ্ছা জানাই। এবছর হঠাৎ এমন পরিস্থিতি সবকিছু পালটে দিল। আমরা নতুনভাবে ভাবতে শিখলাম—সুস্থতাই হলো সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার প্রধান উপাদান।

আর কতদিন হাসপাতালের বিছানায় এভাবে পড়ে থাকতে হবে, আমরা এখনো বুঝতে পারছি না। শীঘ্রই অপারেশনের জন্য কোনো প্রাইভেট হাসপাতালই আমাদের প্রধান আশ্রয় হবে বলে আশা করছি।

৬.

যেখানে মানুষ শান্তি পায়—সকল বাঁধা অতিক্রম সে সেখানেই পৌঁছে যেতে চায়। যেমন আমরা পালিয়ে বেড়াতে চাই যান্ত্রিক জীবনের কাছ থেকে। কোলাহকমুখর শহর ছেড়ে কেবল স্বপ্ন দেখি শান্ত নিরিবিলি একটা সাদামাটা জীবন যাপনের। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠে না নানাবিধ কারণে—তবু সেই আক্ষেপ, না পাওয়ার বেদনা বুকের উপর ভারি পাথর হয়ে চেপে থাকে।

মা-কে জিজ্ঞেস করলাম—বলো তো মা আজ কত তারিখ? মা বলতে পারছে না। অনেককিছুই মনে পড়ছে না তার—আমি বললাম, আজ অক্টোবরের আট তারিখ। আবারও জিজ্ঞেস করলাম—বলো তো মা আজ কীসের দিন? মা বলল, তোমার জন্মদিন।

৭.

আমরা যা ভাবি না, তা-ই অনেকসময় এমনকিছু অদ্ভুত মুহূর্ত তৈরি করে ফেলে যা সত্যিই বিস্মিত হবার মতো। এদিকে মায়ের ব্রেণ-টিউমার, ওদিকে কেউ চোখের পলকে আশ্চর্য আদর নিয়ে সিজদায় কেঁদে ওঠে যেন আমার মা খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসে আমাদের কাছে। বিপদের সময়ই মূলত আপন-পর চেনা যায়—সেক্ষেত্রে আমি এমনকিছু প্রিয় মানুষদের সন্ধান পেয়েছি, যারা আমাকে সবসময় ভালোবেসেছিল কখনো দূর থেকে, কখনো একদম কাছ থেকে।

৮.

তথাপি প্রিয় বন্ধুগণ! আপনাদের প্রতি প্রীতি ও শুভেচ্ছা, যারা আমাকে মনে রেখেছেন যেকোনো দুঃসময়ে।

আরও পড়ুন

দূর জীবনের এ কেমন পরাভূত হাওয়া

দূর জীবনের এ কেমন পরাভূত হাওয়া

গদ্য | ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

যেকোনো প্রস্থানই অনন্ত বেদনার ছায়া ফেলে চলে যায়। কলকাতা বইমেলার পর্দা নেমে গেল আজ, কী অবাক শীত-শীত আচ্ছন্নতা চারদিকে—কতজন, কত মানুষের সঙ্গে বন্ধুতা হলো। কী হবে? এই হতচ্ছাড়া ছোট্ট পাথরটাকে কতজনই তো ছেড়ে গেছে। একাকি নিছানো অন্ধকারে মুখ থুবড়ে কতদিন কেঁদেছে সে। খুব ক্লিশে যন্ত্রণা। তবু এই চেনা-চেনা মানুষগুলো আমার হৃদয়ে একটা মীনরঙ্গ পাখি হয়ে বহুদিন বেঁচে থাকবে।

মানুষের কাছাকাছি না গেলে কখনোই মানুষকে আবিষ্কার করা যায় না। আমি সবার সঙ্গেই কথা বলি—অনেককিছু শেখা যায়, কৌতূহলী না হলে কখনোই ভিন্নতর সৃষ্টির গতিপথ তৈরি হয় না। আমি কলকাতার প্রায় দু’মাস যাপনের দিনগুলোতে প্রতিদিনই কিছু না কিছু শিখেছি, কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো দীঘির পাড়ে পাতানো বেঞ্চে বসে, প্রায় দেখেছি একটা অন্ধ লোকের সঙ্গী একটা নিরীহ কুকুর, যে তাকে পথ দেখায়, বন্ধুর মতোই আগলে রাখে।

We live in a wonderful world that is full of beauty, charm and adventure. There is no end to the adventures we can have if only we seek them with our eyes open.

–Jawaharlal Nehru

আমি এক নতুন পৃথিবী-কে দেখতে চেয়েছি। চোখ-কান খুলে তাকানো নয়, মনের দুয়ার খুলে, শিরধার উঁচু করে তাকাতে চেয়েছি চারপাশে—পাহাড়, সমুদ্র বা আকাশের পাটাতন থেকে খুবলে নিতে চেয়েছি মনের সমস্ত অশুভ দর্পণ।

কী হলো—রাস্তাপারাপারের সময় কার আঙুলের সাথে যেন আমার আঙুল ছুঁয়ে গেল—তার চোখের দিকে চোখ পড়তেই কী অদ্ভুত মায়া খসে পড়ল করুণাময়ী মেট্রো স্টেশনে। আমি সেই দু'খানা আবেগ নিয়ে ফিরে এলাম।

দীপ শেখর চক্রবর্তী, আমার প্রিয় দীপ’দা। মুন্নী সেন, শুভদীপ নায়ক আর শিপ্রা মালাকার, শেষ সময়ের সান্নিধ্য আমাকে এত আনন্দ দিয়েছে আজ। ফেরার পথে শুধু মনে পড়েছে খানিক আগেই তো কিছু একটা ছিল, এখন একেবারেই সুনসান নীরবতা।

তবু যদি—আবারও দেখা হয়ে যায়, কোনোকোনো খেয়ারি সন্ধ্যায়। জীবনের জলপ্রপাত কেবলই নিজেকে জানার। সবকিছু অতিক্রম করে নিজেকে ভালোবাসো, নিজেকে জানো প্রিয়তম বন্ধু, কোনো ভয় নেই, কোনো সঙ্কোচ নেই।

২.

কী হলো—পৃথিবী থমকে দাঁড়িয়েছে না তোমার হস্তরেখায় কে যেন বলেছিল একটা শিশুজন্মের মতো অকথ্য বেদনাবহ সময় তোমারও আসবে। ঠিক তা নয়, হয়তো আমিই আমাকে বলেছিলাম ঘোর স্বপ্নে, এক অজানা বিন্দুবৃত্তের ভেতর। জরাজীর্ণ, লক্ষ্যচ্যুত, অনুতাপ, বেদনা, ক্রমাগত বিচ্ছিন্নতা, বিমর্ষ, কলহ, জঞ্জাল আর এত এত হইহুল্লোড় কখনোই আমি চাইনি।

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কি অপলক দৃষ্টি—আমিই আমাকে দেখতে পাচ্ছি, ঠিক ভেতর-বাইরের অবক্ষিপ্ত নীরবতা যেন। কতদিন নিজের সঙ্গে কথা হয় না। তুমিও দেখো, নিজেকে, ভাবো—কেমন আছো? এদিকটায় খুব শৈত্যপ্রবাহ আজ, তুমি ঘুমিয়ে পড়ো, আয়নার নির্জনতার চেয়ে আর কোনো বিভোর শ্রোতা নেই।

৩.

বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে এলেও মন প’ড়ে থাকে মোহাম্মদপুরের গলি-ঘুপচিতে। ঢাকার তল্লাটে পাথরখচিত রাত ঘিরে চিররহস্যের ঘূর্ণনে সন্ধ্যার উপচে পড়া ভিড় ঠেলে যেন আমি দাঁড়িয়ে আছি ঠিক আসাদগেট মোড়ে। কিন্তু না, আমাকে এক্ষুণি বাসায় যেতে হবে। শান্তিপার্কের ছোট্ট বাসাটা গত দেড়মাস ধরে আমার আশ্রয়, সারাদিন কিছু না হলে লেপটেসেপটে শুয়ে থাকি, জানলার পাশে বসে বই পড়ি, ছোট্ট জানালা খুলে আকাশের দিকে চেয়ে থাকি, কী বিস্ময় লাগে! কী অদ্ভুত এ আকাশ!

কলকাতায় আসার পরদিন থেকে দুর্দান্ত কিছু বই সংগ্রহ করেছি। কলেজস্ট্রিট গেলে খালি হাতে আর ফেরা হয় না। সেই পুরোনো অভ্যেস মস্তিষ্কে ঠেসে গেছে। সেদিন কলকাতা বইমেলায় দীপ’দা, মানে প্রিয় দীপ শেখর চক্রবর্তী’র সঙ্গে এতটা দারুণ সময় কাটিয়েছি। গত দেড় মাসের সবচেয়ে ভালো দিন ছিল আমার জন্যে। তারপর থেকে আজও অব্দি রুম থেকে বেরোয়নি আর, বাইরের এইসব হট্টগোল আমার ভালো লাগে না। যদিও আমাদের কলোনিতে কি যেন অদ্ভুত নৈঃশব্দ্য আছে—মানুষের নরম ভাষা, হলুদ আলোর করতালি আর একাকি বিষণ্ণ মানুষের নির্জীব কান্না।

দূর জীবনের এ কেমন পরাভূত হাওয়া! বলো।

পুরোটা পড়ুন
শিথানে গদ্যের অপূর্ব ব্যঞ্জনা

শিথানে গদ্যের অপূর্ব ব্যঞ্জনা

গদ্য | ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

শতাব্দীর স্মৃতিচিহ্ন কখনো এরকম এক ঘোরলাগা সময়ের সাথে ছায়াচ্ছন্ন সবুজ অথচ বিবর্ণ দেয়ালঘেঁষা কলকাতার মুখর গলিগুলো আমাকে আবিষ্ট করে রেখেছে। সেই কবে এসেছি, এখনো বেরোয়নি সেভাবে। লিটলম্যাগাজিন মেলায় খুব গোছানো আয়োজন দেখে মন ভালো তো হলো কিন্তু লিটলম্যাগ নিয়ে আমাদের বাংলা একাডেমির কঞ্জুসপনা আমাকে প্রতিবারই হতাশ করে।

ব্যক্তিগত স্বর, সংস্কৃতি, কবিতা আর ফেনিল বৈঠক সেরে কতিপয় কবিবন্ধুদের সঙ্গে আজকের মতো আলোচনা শেষ হলো। দেবারতি মিত্রের প্রয়াণ খুব গভীরভাবেই আমাকে আহত করেছে। কিছুদিন আগেই তার লেখার সঙ্গে পরিচয় ঘটেছিল।

২.

শান্তিপার্কের চারতলার ছোট্ট একটা রুমে আমি, আমার মামাতো ভাই গাদাগাদি করে আছি প্রায় মাসখানেক হলো। কয়েকদিন পেরিয়ে যায় আবদ্ধ রুমে, আমাদের রুমের ছোট্ট জানালা থেকেই আকাশের অবাক করা খণ্ডাংশ চোখে পড়ে, পাশের বিল্ডিংয়ের বেলকনি, ছাদে টানানো রশিতে ঝুলে থাকা নানান রঙের পোশাক, ছাদের কার্নিশে থরে থরে সাজিয়ে রাখা বৃক্ষচারার টব, তাহলে আমি বাইরে বেরিয়ে কোথায় যাব যদি জানালা খোললেই এত মুগ্ধতা ঘনিয়ে আসে।

৩.

একদল অসুস্থ শুয়োর ছড়িয়ে আছে আমার চারপাশে। যারা আমার পথ আটকাতে চায়—ওদের জুতোটপেটা করে বিতাড়িত করলাম আজ। ‘ক্ষতিকারক সবকিছুই বিতাড়িত করতে হবে জীবন থেকে’ এক বিদগ্ধ মনীষী একদা বলেছিল আমাকে।

৪.

এ কোন অশালীন শীত নেমে এলো সারা কলকাতায়—আমার হাত-পা জমে যাচ্ছে। হলুদ আলোয় একপাল অনুগামী তরুণদল তাদের বৃত্তের ভেতর হাঁটছে। অথচ আমার শিথানে গদ্যের অপূর্ব ব্যঞ্জনা।

পুরোটা পড়ুন
ট্রেনের কামরায় হুবহু’র পথচলা

ট্রেনের কামরায় হুবহু’র পথচলা

গদ্য | ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

অনেকেই হয়তো হুবহু সম্বন্ধে জানতে চায়—অনেক প্রশ্নও জমা হতে পারে, মনে হতে পারে এ আবার কেমন নাম! হুবহু! কিন্তু হুবহু প্রথম সংখ্যা ছেপে আসার পর গড়গড় করে হাজারখানেক কপি ফুরিয়ে গেল কয়েকদিনেই! সম্পাদক হয়ে আমার নিজেরই চক্ষু চড়কগাছ! কেননা, আমি পূর্বে ‘বেয়ারিং’সহ বেশ কয়েকটা লিটলম্যাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। বেয়ারিং আমাকে যেটুকু পরিচিত করেছে, যেটুকু সমাদৃত করেছে, হুবহু’র হয়তো সেই সময় এখনো আসেনি। কিন্তু হুবহু শুরু থেকেই আমাকে বেশ পরিতৃপ্ত করেছে। বেয়ারিং নিয়ে এখন আর তেমন ভাবনা নেই। আপাতত চিন্তার পরিবর্তন হয়েছে। আগামীকালের ভাবনা সম্পর্কে বলতে পারছি না।

তো, আমি যখন কয়েকজন সাহিত্যপ্রেমী তরুণের সঙ্গে কমলাপুর থেকে চিটাগং মেইলে চড়ে সীতাকুণ্ডের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলাম। তখন হঠাৎ করেই বহুদিনের জমে থাকা একটা পরিকল্পনা তাদের জানালাম। তারা সবাই আমাকে সাহস দিল, তারা বলল অন্তত তাদের জন্য হলেও যেন কাজটা শুরু করি।

হুবহু প্রকাশ হবার পর থেকে এত এত মানুষ আমাদের প্রশংসা করেছে—শুধু দিনলিপি নিয়ে পূর্বে কোনো কাজ হয়নি, ওপার বাংলার মানুষেরাও আমাকে সাধুবাদ জানিয়েছে এর জন্য। কিন্তু ব্যক্তিগত ব্যস্ততার ফলে হুবহু-কে নিয়মিত সময় দিতে পারছি না বলে আমারও যে দুঃখ হয়।

হুবহু’র শুরু থেকে আজ অব্দি আমার সঙ্গী ছিল এফাজ মোবারক এবং তাশরিফ মাহমুদ। ওদের মতো চঞ্চল তারুণ্য পেয়ে আমি আনন্দিত। সর্বোপরি সবার জন্যই অনেক অনেক ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা।

*লেখাটা কেমন যেন ছাড়াছাড়া। শুধু লিখতে হবে তাই লিখলাম, নয়তো আরও পরিমার্জনা করা যেত। ধন্যবাদ।

পুরোটা পড়ুন